জিকা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে চট্টগ্রাম। কয়েকমাসের তুলনায় বেড়েছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। চলতি মাসে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।
এদিকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর সাম্প্রতিক এক গবেষণায় নগরীর পাঁচটি ওয়ার্ডের ১২৮টি বাড়ির মধ্যে ৬২টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। ফলে চট্টগ্রামে জিকা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার উচ্চ ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, চলতি বছর চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৭৬৯ জন। তার মধ্যে মে মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিলো ১১৬ জন, জুন মাসে ১৭৬ জন ও জুলাই মাসে বেড়ে দাঁড়ায় ৩২৪ জন এ। এর মধ্যে গত জানুয়ারি মাসে মৃত্যু হয় ১ জনের, এপ্রিল মাসে ১ জন ও চলতি (জুলাই) মাসে মৃত্যু হয় ৫ জনের। এছাড়া চলতি বছর চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৬৬৯ জন।
গবেষণায় দেখা গেছে, এসব এলাকায় মশাবাহিত রোগের আশঙ্কাজনক উপস্থিতি রয়েছে এবং মশার ঘনত্বের সূচক (Breteau Index—BI) স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। যেখানে BI-এর সর্বোচ্চ সীমা ২০ থাকার কথা, সেখানে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে এ হার ১৩৪.৬২, পাহাড়তলীতে ১১০, হালিশহরে ৬৬.৬৭, ঝাউতলায় ৩৩.৩৩, চট্টেশ্বরীতে ৪৮.৩৯ এবং ওআর নিজাম রোড এলাকায় ৪২.৮৬ পাওয়া গেছে।
লার্ভা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬৫ শতাংশই ছিল এডিস এজিপ্টাই প্রজাতির, ৩২.৬৪ শতাংশ এডিস এলবোপিকটাস এবং ২.৮৬ শতাংশ ছিল দুই প্রজাতির মিশ্রণ।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ৮টি দলে বিভক্ত হয়ে মশক নিধনের একশো দিনের ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ শুরু করেছে। মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. সরফুল ইসলাম মাহি জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে এবং যেসব জায়গায় লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী জিকা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগ ও চসিক প্রস্তুত এবং সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এখন নাগরিকদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজে পরিস্কার পরিচন্ন থাকা এবং চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখা।
পরিস্তিতি মোকাবেলায় বাসাবাড়িতে জমে থাকা পানিতে ব্লিচিং পাউডার বা লবণ মেশানোর জন্য নগরবাসীকে পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ওয়ার্ডগুলো হলো—৯, ১৩, ১৫, ২৬ ও ২৭।