সাংবাদিকের পা কেটে ফেলার হুমকি ইউপি চেয়ারম্যানের

চট্টগ্রামে সাংবাদিকে পা কেটে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বুড়িশ্চর ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদ হোসাইনের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর নিজের নিরাপত্তার জন্য হাটহাজারী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক মো. সাহাব উদ্দিন।

গত ২২ মে, সোমবার রাত ১১ টায় উপজেলার বুড়িশ্চর ইউনিয়নের নজুমিয়াহাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সাহাবউদ্দীন পরিবার নিয়ে ওই এলাকার সোলায়মান বিন্ডিংয়ে বসবাস করেন।

জিডিতে ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন রাতে ব্যক্তিগত কাজে বাসা থেকে নেমে ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল যোগে পার্কিং থেকে সড়কে উঠতেই অজ্ঞাত এক কিশোর গতিরোধ করে মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে নেয়।

চাবি নেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে সে ফোন করে আরও ৪/৫ জন কিশোর ডেকে আনে। ওই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমি কোথায় আসছি আর কেন আসছি জিজ্ঞেস করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তাদের সাথে যোগ দেন স্থানীয় ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদ হোসাইন। স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ওই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের পক্ষ নিয়ে আমার সাথে দুর্ব্যবহার করা শুরু করেন।

ভুক্তোভোগী সাহাব উদ্দীন বলেন, আমি চেয়াম্যানকে আমার পারিবারিক বিস্তারিত তথ্য এবং আমার পেশা সম্পর্কে অবগত করি। পেশা সাংবাদিকতা শুনে তিনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে গলা চিপে ধরেন এবং এ এলাকায় দ্বিতীয়বার দেখলে দেখে নিবে বলে হুমকি দিতে থাকে। চেয়ারম্যান ও তার পালিত বাহিনীর অবস্থার ব্যতিক্রম দেখে নিজেকে রক্ষার জন্য আমি পুলিশের সহযোগিতা পেতে হাটহাজারী থানায় ফোন দিই।

পুলিশকে ফোন দিচ্ছি শুনে চেয়ারম্যান আরও চড়াও হয়ে আমাকেসহ পুলিশকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। পরে পুলিশ আশার আগেই তিনি এবং তার বাহিনী সেখান থেকে সটকে পড়েন।

তিনি আরও বলেন, পেশাগত পরিচয় দেওয়ার পরও একজন জনপ্রতিধির এমন আচরণে আমি হতভম্ব। একজন চেয়ারম্যান কিভাবে গণমাধ্যম কর্মীর হলা চিপে ধরে এবং এলাকা আবার দেখলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। আমি উনাকে এটাও বলেছি, আপনাকে আমার বিস্তারিত সব তথ্য জানিয়েছি। পুলিশ আসতেছে। আমি যদি কোন অন্যায় করি পুলিশকে বলেন। পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিক।

সাহাব উদ্দীন বলেন, বারবার নিজের পরিচয় দিয়ে অনুরোধ করার পরও চেয়ারম্যান জাহেদ আমার গলা চেপে ধরে পাশের দেওয়ালের সাথে ধাক্কা দেন। এতে করে আমার গলায় ও শরীরের আঘাত পাই।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, ২২ মে, সোমবার রাতে সাংবাদিক সাহাব উদ্দিন পুলিশের সহযোগীতা চেয়েছিলেন। আমরা সাথে সাথেই পুলিশ পাঠিয়েছি। পরে ওনি থানায় জিডি করেছেন। ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মো. জাহেদ হোসাইন বলেন, ওনার পারিবারিক সমস্যা চলছিল। ওনি রাতে বাসার দরজা বন্ধ থাকায় জোরে ধাক্কা দিয়েছিল। পরে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি সেখানে যাই। তাকে তার বাসা থেকে হাত ধরে আমি বের করে দিয়েছি। তাকে কোন মারধর করি নাই।

আমি শুনেছি তিনি আমার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন। ইউএনও বরাবর অভিযোগও দিয়েছেন। আমাকে ডাকলে আমি জবাব দিবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মানবাধিকার আইনজীবী এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান বলেন, ‘শারীরিক মানসিক নির্যাতন কেউ কারও ওপর করতে পারে না। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। বিচারের সম্মুখীন করা যাবে। আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারবে না। চেয়ারম্যান যদি এ ধরনের কাজ করে থাকে সেটা বেআইনি হয়েছে, তিনি আইন ভঙ্গ করেছেন’।

চসা/কিবরিয়া

Share on whatsapp
WhatsApp
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram