কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই ধারাবাহিকভাবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের তিন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জর্জিয়ার একটি ফেডারেল আদালতে দায়ের করা মামলায় ইতোমধ্যেই বাদীর সংখ্যা পৌঁছেছে ১৩৩ জনে।
অভিযুক্ত তিন কর্মকর্তা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম এবং অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টড লিয়নস।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, এই কর্মকর্তাদের নির্দেশে আইসিই সংস্থা আইন লঙ্ঘন করে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করছে, যা তাদের বৈধ অবস্থানকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
প্রথমে গত ১১ এপ্রিল ১৭ জন শিক্ষার্থী মামলাটি দায়ের করেন। এরপর ধাপে ধাপে বাদীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার মামলার বাদী দাঁড়ায় ১৩৩ জনে।
প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর মাত্র তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ৬০০-এর বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এসব শিক্ষার্থীদের অনেকেই গত বছর গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের বিরোধিতা ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন।
এছাড়া অপেক্ষাকৃত সামান্য অপরাধ—যেমন গণপরিবহনে টিকিট ছাড়া যাতায়াত কিংবা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের ঘটনাকেও ভিসা বাতিলের কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, শিক্ষা সংক্রান্ত ওয়েবসাইট ইনসাইড হায়ার এডি-এর একটি প্রতিবেদনেও এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, “সম্ভবত এ পর্যন্ত ৩০০-এর বেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও হবে। আমরা প্রতিদিনই এই কাজ করছি। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে উন্মাদমুক্ত রাখতে চাই।”
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর মনোভাবের জন্য পরিচিত। দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা গ্রহণের পর পুনরায় সেই নীতি কার্যকর করেছে তারা। এরই অংশ হিসেবে, পূর্বসূরি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে যারা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি পেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে অন্তত ১০ লাখ অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।