টেকনাফে ভুট্টো হত্যার বিচার পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

সংবাদ

টেকনাফ উপজেলায় নিশংস ভাবে হত্যার শিকার হওয়া লবণচাষী ও সমাজকর্মী নুরুল হক ভুট্টোর হত্যাকারিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তার পরিবার।

আজ বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন টেকনাফে খুন হওয়া লবণচাষী ও সমাজকর্মী নুরুল হক ভুট্টোর ভাই মো. নুরুল ইসলাম নুরু।

তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, চলতি বছরের ১৫ মে সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূর হোসেনের বাড়িতে একটি সালিশি বৈঠকে যোগ দিয়ে ফেরার পথে বড় ভাই নুরুল হক ভুট্টোকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মেম্বার নির্বাচনের বিরোধকে কেন্দ্র করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত টেকনাফের চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী একরামের নেতৃত্বে আমার ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। হামলার মুখে জীবন বাঁচাতে আমার ভাই দৌড়ে গিয়ে মসজিদে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলেও হামলাকারীরা চাইনিজ কুড়াল এনে মসজিদের দরজা কেটে তাকে টেনে হিঁচড়ে বের করে কুপিয়ে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর হত্যাকারীরা আমার ভাইয়ের ডান পা কেটে কাঁধে নিয়ে বিজয় উল্লাস করতে করতে চলে যায়। আমার ভাইকে দাফন করতে হয়েছে এক পা ছাড়াই।

২০২০ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালদের আহ্বানে যে ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেছিল তাদের মধ্যে একরাম ছিল ২ নম্বরে। আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করলেও বাস্তবে একরামের মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম এখনো চলছে। এলাকায় আমার ভাইয়ের পরিচ্ছন্ন ইমেজ ছিল। আমার ভাইয়ের কারণে নির্বাচনে চাচাতো ভাই বিপুল ভোটে জয়ী হয়। মূলত সেই থেকেই নুরুল হক ভুট্টোর ওপর ক্ষুব্ধ ছিল একরাম ও তার বাহিনী।

নুরু বলেন, এই নৃশংস ঘটনার পরের দিন ১৭ জনকে এজাহারভুক্ত এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৮-১০ জনকে আসামি করে টেকনাফ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ এখন পর্যন্ত মাত্র ৭ আসামিকে গ্রেফতার করতে পেরেছে। এই ঘটনার আড়াই মাস পার হয়ে গেলেও হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা ইয়াবা সম্রাট একরামসহ বেশিরভাগ আসামি স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

আসামিরা হলেন- একরাম প্রকাশ একরাম ডাকাত (৩৫), আব্দুর রহমান (৩৫), আব্দুর রাজ্জাক (৩৮), মোহাম্মদ রিদুয়ান (২৮), তৌকির আহমদ (৩০), নুরুল আলম(৪০), মো. সাদ্দাম (৩০), আব্দুল আমিন (৩২), হাজী ফজল আহমদ (৬৫), আলী আহম্মদ (৬০), আবু বকর প্রকাশ ভক্কো (৩০), রহীমুল্লাহ (২৮), আব্দুল খালেক (২৮), মো. আবদুল্লাহ (৪০), বশির আহমদ (৪৫), সাইফুল ইসলাম, ফয়সালসহ অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জন।

তিনি আরও বলেন, মূলত একরামের বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার অপরাধে আমার ভাই ও আমার পরিবারকে চড়া মাসুল দিতে হয়েছে। একরাম ও তার অনুগত সন্ত্রাসীদের নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার আমরা। এই অবস্থায় হত্যাকাণ্ডের আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় ও তাদের হুমকিতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমরা জীবনের নিরাপত্তা ও আমার ভাইকে হত্যার বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত ভুট্টোর ভাই নুরুল ইসলাম নুরু। উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরোয়ার কাবেরী, নিহতের মা আবেদা খাতুন, স্ত্রী নাজনীম সুলতানা, বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাইলা বেগম, ছোট ভাই নুরুল আবসার খোকন ও ভাগিনা বেলাল, নূরুল আবছার।

Share on whatsapp
WhatsApp
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram