চট্টগ্রামের হিলভিউ আবাসিক এলাকার প্রায় ২০০ জন প্লট মালিক নামজারি ও খাজনা পরিশোধে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, বিভাগীয় অতিরিক্ত কমিশনার (রাজস্ব) মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন ‘কথিত জটিলতা’র অজুহাতে নামজারি প্রক্রিয়া স্থগিত করেছেন।
বুধবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন হিলভিউ আবাসিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. জহুরুল আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমিতির নেতারা জানান, হিলভিউ আবাসিক এলাকা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) অনুমোদিত একটি প্রকল্প। প্রায় ৪৫ বছর আগে গড়ে ওঠা ৫৮ একরের এ এলাকায় এখন অন্তত ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করছেন। ১৯৯৫ সালে প্লট বরাদ্দ পাওয়া মালিকেরা মোট ১৪৯টি খতিয়ানের ভিত্তিতে ভূমি কর পরিশোধ করে আসছেন।
তবে পাঁচলাইশ সহকারী কমিশনার (ভূমি) একটি আন্তঃবিভাগীয় চিঠির ভিত্তিতে নামজারি ও খাজনা আদায় স্থগিত করেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে মালিকেরা হাইকোর্টে রিট করলে ২০১০ সালের ২৫ অক্টোবর আদালত স্থগিতাদেশকে অবৈধ ঘোষণা করেন।
এরপর ১২৩ জন মালিক নতুন করে নামজারি আবেদন করলে দুটি পূর্ববর্তী মামলার অজুহাত দেখিয়ে তা খারিজ করা হয়। পুনরায় উচ্চ আদালতে গেলে ২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের আপিল বিভাগ স্থানীয় মালিকদের পক্ষে রায় দেন। এই রায়ের ভিত্তিতে প্রায় ২০০ জন মালিকের নামজারি কার্যক্রম ও খাজনা পরিশোধের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
তবে সম্প্রতি বাকি আরও ২০০ জন মালিক নামজারি আবেদন করলে বিভাগীয় অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন ‘কথিত জটিলতা’র অজুহাতে আবারও তা স্থগিত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ ভূমির ইতিহাস অনেক পুরোনো। আরএস খতিয়ানে এটি অবলা সুন্দরী দেবীর নামে ছিল। পরবর্তী সময়ে পিএস খতিয়ানে মোছাম্মৎ আনজুমান্নেসা ও বিএস খতিয়ানে ‘হিলভিউ হাউজিং কোম্পানি’র নামে অন্তর্ভুক্ত হয়।
হিলভিউ কল্যাণ সমিতির নেতারা অভিযোগ করেন, ২০১০ সালেও মোয়াজ্জম হোসাইন পাঁচলাইশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন এবং সেসময় থেকেই নানা অজুহাতে নামজারিতে বাধা দিয়ে আসছেন। তারা মনে করছেন, এই কর্মকাণ্ড উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানিমূলক।
সংগঠনটি দাবি করেছে, হাইকোর্টের রায় থাকা সত্ত্বেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার এমন আচরণ ভূমির মালিকদের আইনি অধিকার ক্ষুণ্ণ করছেন ও প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।