logo
ভুল চিকিৎসায় কাটতে হলো শিশুর হাত-পা, ভুয়া চিকিৎসক গ্রেপ্তার!
সংবাদ প্রকাশিত:

ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিনে এক শিশুর ভুল চিকিৎসার ঘটনায় স্যাকমো (সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার) মো. শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়।

শফিকুল ইসলাম নিজেকে “ডাক্তার” পরিচয় দিয়ে একটি প্রাইভেট চেম্বারে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। তার ভুল চিকিৎসার শিকার হয় ৮ বছর বয়সী শিশু মো. তানভীর। শিশুটির মা মোসা. মিতু গত ১৫ জুলাই ভোলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৩ জুলাই জ্বরে আক্রান্ত শিশু তানভীরকে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। হাসপাতালের গেট থেকে ‘আকিব মেডিকেল হল’ ফার্মেসির মালিক মো. আকিব উল্লাহর প্ররোচনায় তাকে শফিকুল ইসলামের কাছে নেওয়া হয়। সেখানে শফিকুল নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে ডেঙ্গু রোগের কথা বলে চারটি ইনজেকশন পুশ করেন।

ইনজেকশন পুশ করার পর শিশুর হাতে ও পায়ে কালচে দাগ ও পচন ধরতে থাকে। পরে শিশুটিকে ভোলা, বরিশাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসা করাতে গিয়ে দরিদ্র পরিবারটি বসতভিটাসহ সবকিছু বিক্রি করে প্রায় ৯ লাখ টাকা ব্যয় করে।

শিশুর বাবা মো. মোসলেম জানান, শেষমেশ ১৯ জুলাই ঢাকা মেডিকেলের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ছেলের ডান পা ও দুই হাতের কব্জি কেটে ফেলেন। বর্তমানে সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫১৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, শফিকুল ইসলাম প্রকৃত চিকিৎসক না হয়েও ডাক্তার সেজে ভুল ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন এবং শিশুর প্রকৃত রোগ নির্ণয় না করেই ডেঙ্গু বলে ইনজেকশন প্রয়োগ করেছেন। অথচ পরবর্তীতে জানা যায়, শিশুর ডেঙ্গু হয়নি।

এ ঘটনায় মামলার আরেক আসামি ‘আকিব মেডিকেল হল’-এর মালিক মো. আকিব উল্লাহ এখনও পলাতক রয়েছেন।

বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আদালতের নির্দেশে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

ভুক্তভোগী শিশু তানভীর ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ফুলকাচিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং চরমোনাই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল।