চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মোহাম্মদ ইরফান উদ্দীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি জগতে সাফল্যের অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তিনি সিলিকন ভ্যালির শীর্ষস্থানীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাস্টেরা ল্যাবস’-এ ইলেকট্রিক্যাল প্রোডাক্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দিচ্ছেন। বছরে বেতন ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, সঙ্গে প্রথম বেতনের সঙ্গে মিলবে ৩০ লাখ টাকার সাইনিং বোনাস।
৯ ধাপের কঠোর ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া পেরিয়ে ইরফান ২১ মে নিয়োগপত্র হাতে পান। ৩০ জুন (সোমবার) থেকে তিনি অফিসিয়ালি কাজ শুরু করবেন।
ধর্মপুর ইউনিয়নের কমিটি বাজার এলাকার এক সাধারণ পরিবারে জন্ম ইরফানের। ধর্মপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম কলেজ থেকে জিপিএ-৫.০০ পেয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। এরপর চুয়েট থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে সিজিপিএ মাত্র ২.৯৮ হওয়ায় চাকরির বাজারে শুরুটা ছিল কঠিন। কিছুদিন বেকার থাকার পর ওয়ালটনে চাকরি নেন।
বিশ্বজুড়ে নিজের অবস্থান তৈরির লক্ষ্য নিয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। জিআরইতে ৩৩১ স্কোর করে গবেষণাপত্র ছাড়াই ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইয়োমিংয়ে ফুল ফান্ডিং স্কলারশিপে মাস্টার্স শুরু করেন ২০২৩ সালে।
চাকরি পেতে হাজারের বেশি আবেদন জমা দিতে হয় তাকে। মাস্টার্সের শেষ পর্যায়ে এসে ইন্টারভিউ পাওয়া শুরু করেন এবং মে মাসে অ্যাস্টেরা ল্যাবস থেকে অফার পান। চাকরির ইন্টারভিউয়ের অংশ হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়ায় গিয়ে একদিনে টানা সাতটি ইন্টারভিউও দিতে হয় তাকে।
ইরফানের এই সাফল্যে গর্বিত ফটিকছড়ির মানুষ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একরাম উল্লাহ বলেন, “ইরফান শুধু আমাদের স্কুল নয়, পুরো দেশের গর্ব।” উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “তার এই অর্জন ফটিকছড়ির জন্য অনুপ্রেরণা।”
ইরফান বলেন, “চুয়েট থেকে পাস করার পর ভেবেছিলাম দেশেই ক্যারিয়ার গড়ব। কিন্তু বাস্তবতা বদলে দেয় পথ। ওয়ালটনে কাজ শেখা, পরিশ্রম, আর অধ্যবসায়ের ফলেই আজ আমার স্বপ্নপূরণ হয়েছে।”