পিকেকে বিলুপ্তির ঘোষণা, শেষ হচ্ছে সংঘাতময় অধ্যায়ের

স্বেচ্ছায় নিজেদের বিলুপ্তির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। ফলে তুরস্কে চারদশক ধরে চলা সংঘাতময় এক অধ্যায়ের সমাপ্তি হতে চলছে।

পিকেকের ঘনিষ্ঠ ফিরাত নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে সোমবার (১২ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চার দশক ধরে চলমান সহিংসতার অবসান ঘটাতে আঙ্কারার সঙ্গে নতুন শান্তি উদ্যোগের অংশ হিসেবে একটি কংগ্রেস আয়োজনের পর বিলুপ্তির ঘোষণা দেয়া হলো।

এর কয়েক দিন আগে উত্তর ইরাকে একটি কংগ্রেস আয়োজন করে দলটি। শুক্রবার হওয়া ওই কংগ্রেসের পর সোমবার দলটি বিলুপ্ত এবং সশস্ত্র সংগ্রাম বন্ধের ঘোষণা এল।

আল জাজিরা বলছে, এর মাধ্যমে তুরস্কে চার দশক ধরে চলা সংঘাত বন্ধ হতে যাচ্ছে। দলটি বলছে, তারা একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে, যা খুব দ্রুতই জনগণকে জানানো হবে।

ফিরাত নিউজ এজেন্সি জানায়, শুক্রবারের ওই কংগ্রেসে পিকেকে নেতা আবদুল্লাহ ওকলানের ‘দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রস্তাবনা’ ‍সংবলিত একটি বিবৃতি পাঠ করা হয়।

পিকেকের বিলুপ্তির ঘোষণার পর তুর্কি সরকারের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

গত ফেব্রুয়ারিতে কারাবন্দি কুর্দি নেতা আবদুল্লাহ ওকালান তার অনুসারী যোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পণের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে তুর্কি রাষ্ট্রের সাথে কয়েক দশকের সংঘাতের অবসানের লক্ষ্যে পিকেকে-কে বিলুপ্ত করার আহ্বানও জানান।

১৯৮৪ সালে কুর্দিদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই শুরু করে পিকেকে। সেই লড়ইয়ে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। পরে কুর্দিরা তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী লক্ষ্য থেকে সরে এসে দক্ষিণ-পূর্ব আনাতোলিয়ায় একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং কুর্দিদের জন্য বৃহত্তর অধিকারের দাবি জানাতে থাকে।

পিকেকে-র সাথে যুক্ত গোষ্ঠীগুলো তুরস্কে মাঝেমধ্যেই হামলা চালায়। তারা সাধারণত গাড়ি বোমা ও অন্যান্য উপায় ব্যবহার করে তুরস্কের সেনা ও সামরিক অবকাঠামোর ওপর হামলা করে থাকে। তুরস্কের পাশাপাশি সিরিয়া ও ইরাকেও এই গোষ্ঠীর সদস্যদের অবস্থান রয়েছে। তুরস্ক ও এর মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো পিকেকেকে একটি ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।

৭৫ বছর বয়সি ওকালান রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ১৯৯৯ সাল থেকে ইস্তাম্বুলের কাছে ইমরালি দ্বীপে বন্দি রয়েছেন। যুদ্ধবিরতি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পিকেকে ওকালানকে মুক্তি দিতে আঙ্কারার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

Share on whatsapp
WhatsApp
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram