পাহাড় কেটে বহুতল ভবন নির্মাণ, ভাঙছে সিডিএ

চট্টগ্রাম নগরীর আসকার দিঘীর পাড় এলাকায় পাহাড় কেটে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।

সোমবার সকালে শুরু হওয়া এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিডিএ’র স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম। অভিযানে সহায়তা করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ‘স্বপ্নীল ফ্যামিলি ওনার্স’ নামে ৯২ জনের একটি দল প্রায় চার বছর আগে সিডিএ’র অনুমোদন নিয়ে সেখানে ভবন নির্মাণ শুরু করে। ৩০ কাঠা জমিতে ১৪ তলা ভবনের অনুমোদন দেওয়া হলেও শর্ত ছিল—শুধু ৪০ শতাংশ জমিতে নির্মাণ হবে, বাকি ৬০ শতাংশ খালি রেখে পাহাড় অক্ষত রাখতে হবে।

কিন্তু সেই শর্ত ভেঙে পাহাড় কেটে এবং অনুমোদনের সীমা ছাড়িয়ে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযানকালে দেখা যায়, পুরো এলাকা টিনের শিট দিয়ে ঘেরা এবং সামনের দিকে ভবনের তিনতলার সমান কাঠামো তৈরি হয়েছে। ভেতরের অংশে পাহাড় কেটে ঢালু করা হয়েছে এবং সেখানে ভিত্তি নির্মাণের কাজ চলছিল।

অভিযানের সময় মালিকপক্ষের কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।

সিডিএ’র স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম বলেন, “স্বপ্নীল ফ্যামিলি নামের একটি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অনুমোদনের শর্ত ভেঙে পাহাড় কেটে ১৪ তলা ভবন নির্মাণ করছিল। তাদের নোটিস দেওয়া হয়েছিল। তারা উচ্চ আদালতে গিয়ে স্থগিতাদেশ এনেছিল, যা গতকাল চেম্বার জজ আদালত বাতিল করে। এরপরই অভিযান পরিচালনা করা হয়।”

সিডিএ’র অথরাইজেশন অফিসার তানজীব হোসেন বলেন, “প্রথম দিকে পাইলিং ও বেসমেন্টের কাজ শুরু হলে আমরা নোটিস দিয়ে বাধা দিয়েছিলাম। এরপর তারা আদালতের নির্দেশে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। আজ সিডিএ চেয়ারম্যানের নির্দেশে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এখানে পাহাড় কেটে পরিবেশ আইন এবং ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে।”

অতিরিক্ত জমিতে নির্মিত অবকাঠামো ভেঙে ফেলা হবে বলেও জানান তিনি।

উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম বলেন, “ভবিষ্যতে এভাবে যেন পাহাড় কাটার সুযোগ কেউ না নিতে পারে, সে বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ সময় উপস্থিত সিডিএ বোর্ড সদস্য জাহিদুল করিম কচি বলেন, “এই উচ্ছেদ অভিযান সাধারণ মানুষের কাছে একটি বার্তা—অবৈধভাবে নির্মাণ করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”

উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে একই এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতি সর্ববিদ্যা অভিযান চালিয়ে ভবন নির্মাণে পাহাড় কাটার প্রমাণ পেয়েছিলেন। পরিবেশ অধিদপ্তরও চার বছর আগে ভবন নির্মাণকারীদের একবার জরিমানা করেছিল।

Share on whatsapp
WhatsApp
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram