চট্টগ্রামে অটোরিকশাসহ নালায় পড়ে মায়ের কোল থেকে স্রোতের টানে ভেসে যাওয়া ছয় মাস বয়সী শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজের প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর চাক্তাই খালে শিশুটির মরদেহ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা তা উদ্ধার করে।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের কাপাসগোলা এলাকায় একটি হোটেলের পাশের খোলা নালায় একটি ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ পড়ে যান এক মা ও তাঁর শিশু সন্তান। স্থানীয়দের সহযোগিতায় মা-কে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও শিশুটি পানির স্রোতে তলিয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এবং এলাকাবাসী রাতভর তল্লাশি চালিয়ে যান। শনিবার সকালে চাক্তাই খালে মরদেহটি পাওয়া যায়।
উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উদ্ধার অভিযানে থাকা নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট বেলাল।
চট্টগ্রামে এর আগেও এমন মর্মান্তিক ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট মুরাদপুর মোড়ে বৃষ্টির মধ্যে নালায় পড়ে নিখোঁজ হন সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ, যাঁর মরদেহ উদ্ধার করা যায়নি। একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর আগ্রাবাদ এলাকায় হাঁটার সময় নালায় পড়ে প্রাণ হারান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া।২০২২ সালে ষোলশহর এলাকায় নালায় পড়ে নিখোঁজ হয় শিশু কামাল, যার মরদেহ তিন দিন পর উদ্ধার করা হয়। ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট আগ্রাবাদ রঙ্গীপাড়া এলাকায় ১৮ মাস বয়সী শিশু ইয়াছিন আরাফাত ১৭ ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার পর নালায় থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয়। ২০২৪ সালের জুনে গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় সাত বছর বয়সী শিশু সাইদুল ইসলাম নালায় পড়ে নিখোঁজ হয় এবং পরদিন নাছির খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় খোলা নালা ও ড্রেনের কারণে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও সিটি কর্পোরেশন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। বৃষ্টির সময় এসব খোলা নালা পানিতে পূর্ণ হয়ে পথচারীদের জন্য মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়। প্রতিটি মৃত্যুর পর সাময়িক আলোচনার সৃষ্টি হলেও দীর্ঘমেয়াদি কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয় না।