চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১১ আসামিকে এবার বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলাটি করেছেন নিহত আলিফের ভাই খানে আলম।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রামের ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
গ্রেপ্তার দেখানো ১১ আসামি হলেন: প্রেমনন্দন দাস বুজা (১৯), রনব দাস (২৪), বিধান দাস (২৯), বিকাশ দাস (২৪), রুমিত দাস (৩০), রাজ কাপুর (৫৫), সামির দাস (২৫), শিব কুমার দাস (২৩), ওম দাস (২৬), অজয় দাস (৩০) এবং দেবীচরণ (৩৬)।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ইসকন সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের আজ কড়া নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করা হয়। বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।’
২০২৪ সালের ২৫ নভেম্বর রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বহিষ্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। কোতোয়ালী থানার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে তোলা হলে জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।
কারাগারে পাঠানোর সময় চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজনভ্যান আটকে প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় চিন্ময়ের অনুসারীদের।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের বিপরীত দিকে রঙ্গম সিনেমা হল গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর এবং পুলিশের কাজে বাধাদানের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা দায়ের করে।
এ ছাড়া, আলিফের বাবা ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আলিফের ভাই খানে আলমও যানবাহন ভাঙচুর ও জনসাধারণের ওপর হামলার ঘটনায় ১১৬ জনকে আসামি করে বিস্ফোরক আইনে আরেকটি মামলা করেন।
এজাহারে বলা হয়, চিন্ময় ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরের পর বিক্ষোভ চলাকালে সংঘর্ষ শুরু হলে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয় এবং ২০-৩০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।