চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ গ্রামে মাইজপাড়া এলাকায় প্রায় ৩০০ বছর পূর্বে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় মাইজপাড়া জামে মসজিদ ও ফোরকানিয়া মাদ্রাসা। সম্প্রতি একদল ব্যক্তি মসজিদের নাম পরিবর্তন করে এক ব্যক্তির নামে নামফলক বসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, যা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এলাকাবাসীর দাবি, মসজিদটি সি.এস, আর.এস ও বি.এস খতিয়ানে সরকারি খাসজমিতে নির্মিত এবং এটি সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়রা এখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, জুমার নামাজ, ফোরকানিয়া শিক্ষা ও ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
কিন্তু সম্প্রতি বাঁচা মিয়া নামের এক ব্যক্তির ওয়ারিশগণ মসজিদটি নিজেদের দাবি করে সেখানে তার নামের ফলক স্থাপন করেছেন। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয় মুসল্লিরা এর প্রতিবাদ জানান। অভিযোগ রয়েছে, বাঁচা মিয়ার ওয়ারিশগণ মুসল্লিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে এবং ইমাম ও মোয়াজ্জিনকে হুমকি দিয়ে তাদের চাকরিচ্যুত করার চেষ্টা করছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় একাধিক বৈঠক হলেও বিরোধ নিরসনে কোনো সমাধান আসেনি। ২০১১ সালে তৎকালীন সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন খান বাদল অনুমোদিত মসজিদ কমিটি থাকলেও তা উপেক্ষা করে একদল ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে মসজিদের নাম পরিবর্তনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করা হলে আদালত নির্দেশ দেন যে, মূল মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মসজিদের গেট বা অন্য কোথাও ব্যক্তির নামফলক স্থাপন করা যাবে না এবং এর গঠন পরিবর্তন করা যাবে না। তবে আদালতের আদেশ অমান্য করে বিবাদীপক্ষ মসজিদের গেটে ব্যক্তির নামফলক লাগিয়ে দেয়।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে নজরুল ইসলাম গং স্থানীয় মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়, এতে কয়েকজন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়, যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে (মামলা নং- ৪৫৭/২০২৪)।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করবেন। তবে এলাকাবাসীর দাবি, মসজিদের ঐতিহ্য রক্ষা করে পূর্বনির্ধারিত নাম মাইজপাড়া জামে মসজিদ ও ফোরকানিয়া মাদ্রাসাই বহাল রাখা হোক।