পূর্বাচলে শেখ হাসিনা পরিবারের প্লট বরাদ্দ: দুদকের অনুসন্ধান শুরু

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১০ কাঠা করে ৬টি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ রয়েছে যে, তাদের বিরুদ্ধে পূর্বাচল প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনে প্লট বরাদ্দের মাধ্যমে সরকারি সম্পদ আত্মসাতের চেষ্টা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দুদক জানায়, রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারের ১৩/এ ধারার ক্ষমতাবলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), ছোট বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রেদোয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি এবং রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকী পূর্বাচল প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর রোডে ৬টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। প্লটগুলোর মোট আয়তন ৬০ কাঠা।

এই তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পর দুদক অনুসন্ধানে নেমেছে। সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) জানান, তারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করতে শুরু করেছেন।

এদিকে, ২২ ডিসেম্বর দুদক সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার মায়ের বিরুদ্ধে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। ওই অভিযোগের মধ্যে পারিবারিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও বিদেশে অর্থ পাঠানোর বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর আগে, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছিল। এই টিম ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির প্রমাণ সংগ্রহ করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ২০১৪ সালে সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার মায়ের বিরুদ্ধে একটি প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। এফবিআইয়ের অনুসন্ধানে উঠে আসে যে, সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করেছে। বিশেষ করে, হংকং এবং কেম্যান আইল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক এবং লন্ডনের ব্যাংকগুলোতে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।

এছাড়া, গত ১৭ ডিসেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ ৮টি প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। রূপপুরসহ বেশ কিছু প্রকল্পে পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

অন্যদিকে, গত ১৫ ডিসেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলার লোপাটের অভিযোগে হাইকোর্টে রুল জারি করা হয়, যাতে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা অবৈধ ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। ওই রিটের সঙ্গে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়, যেখানে শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যরা মালয়েশিয়ার ব্যাংক ব্যবহার করে রূপপুর প্রকল্প থেকে বিপুল অর্থ পাচার করেছে বলে উল্লেখ করা হয়।

Share on whatsapp
WhatsApp
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram