রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেকে কেন্দ্র করে যখন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিচ্ছে রাশিয়া ঠিক তখনই পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে চীন ও রাশিয়াকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পরমাণু অস্ত্র নিয়ে বিতর্কের মধ্যে সোমবার (১ আগস্ট) দেশ দুটির প্রতি এ আহ্বান জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। অভিযানের পর থেকে প্রতিনিয়ত পরমাণু যুদ্ধের শঙ্কা জোরদার হচ্ছে।
অভিযান শুরুর তিনদিন পরই (২৭ ফেব্রুয়ারি) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেন। মূলত ন্যাটো নেতাদের উস্কানিমূলক বক্তব্য-বিবৃতি ও মস্কোর বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে এমন নির্দেশ দেন তিনি।
ওই সময় পুতিনের এ পদক্ষেপকে পুরোপুরি ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া পুতিনের সিদ্ধান্তকে ‘বিপজ্জনক ও দায়িত্বহীন’ বলে মন্তব্য করে ন্যাটো।
সোমবার (১ আগস্ট) চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে নতুন চুক্তির জন্য আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বলেন, পরমাণু নিয়ন্ত্রণে তার প্রশাসন বর্তমান চুক্তির জায়গায় নতুন চুক্তির জন্য দ্রুত আলোচনা করতে প্রস্তুত।
বাইডেন বলেন, চীন ও রাশিয়ার দ্রুত পরমাণু আলোচনায় ফেরা উচিৎ। বিশেষ করে ইউক্রেনে অভিযানের পর এ ব্যাপারে রাশিয়ার দায়িত্ব বেশি।
বর্তমানে পরমাণু অস্ত্র সীমিতকরণে ‘স্ট্র্যাটেজিক আর্মস রিডাকশন ট্রিটি‘ (এসটিএআরটি) নামে একটি চুক্তি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যকার চুক্তিটির মেয়াদ আগামী ২০২৬ সালে শেষ হবে।
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় চীনের পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা কম। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটি তাদের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।
চীন প্রসঙ্গে বাইডেন বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে চীনের দায়িত্ব এমন আলোচনায় অংশীদার হওয়া। এটি হিসাবে ভুল হওয়ার ঝুঁকি কমাবে এবং সামরিক অস্থিতিশীলতার সমাধান করবে।
বাইডেন আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্র প্রযুক্তির বিস্তার রোধে পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি বা এনপিটির কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে পরাশক্তি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে।
এদিকে পরমাণু যুদ্ধ শুরু হলে এ যুদ্ধে কেউ জিততে পারবে না বলে ফের সতর্ক করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের যুদ্ধ যেন কখনো যেন শুরু না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
পরমাণু যুদ্ধবিরোধী চুক্তির কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট পুতিন আরও বলেন, রাশিয়া এ চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলছে। নিউইয়র্কে এ নিয়ে একটি সম্মেলন হচ্ছে। সেখানে একটি চিঠি পাঠিয়ে রাশিয়ার অবস্থানের কথা জানান তিনি