আজ বিশ্ব মা দিবস, একটি বিশেষ দিন যা মায়েদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশের উপলক্ষ। সন্তানের জন্মের আগ থেকেই মায়ের সঙ্গে গড়ে ওঠা সম্পর্ক এক অটুট বন্ধনে পরিণত হয়, যা সন্তানকে জীবনের প্রতিটি ধাপে স্নেহ ও সুরক্ষা দিয়ে আগলে রাখে। আজ সেই সকল মায়েদের সম্মান জানানোর দিন, যারা আমাদের জীবনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ আশ্রয়।
আব্রাহাম লিংকনের বিখ্যাত উক্তি, “যার মা আছে, সে কখনই গরীব নয়,” মায়েদের স্নেহময় সুরক্ষার গুরুত্বকে আরও একবার তুলে ধরে। মায়ের উপস্থিতি জীবনে যেমন নিরাপত্তা ও ভরসার স্থান তৈরি করে, তেমনি মাকে হারানোর বেদনা সন্তানের জন্য এক গভীর শূন্যতা তৈরি করে। যদিও মাকে শ্রদ্ধা জানানো উচিত প্রতিটি দিন, মা দিবস আমাদের এই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশের জন্য একটি বিশেষ সুযোগ এনে দেয়।
প্রাচীন গ্রিসের মাতৃ দেবী সিবেলের আরাধনা থেকে শুরু করে, রোমান দেবী জুনোর পূজা, এমনকি ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যের মাদারিং সানডে পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে মা দিবসের ধারণা প্রকাশ পায়। তবে যুক্তরাষ্ট্রে মা দিবস পালনের প্রচলন শুরু হয় সমাজকর্মী জুলিয়া ওয়ার্ড হোই-এর হাত ধরে, যিনি ১৮৭০ সালে গৃহযুদ্ধের সময় মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মা দিবস পালনের আহ্বান জানান। এরপর অ্যান মারিয়া রিভস জার্ভিস ও তার মেয়ে আনা মেরি জার্ভিস এই উদ্যোগকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যান। আনার মা মারা যাওয়ার পর, তিনি তার মায়ের স্মৃতিকে অমর করে রাখতে ১৯০৮ সালে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এবং পরবর্তীতে তার প্রচেষ্টায় ১৯১৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মা দিবসকে সরকারি স্বীকৃতি দেন।
এই বিশেষ দিনটি এখন বিশ্বের নানা প্রান্তে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার পালন করা হয়, যা মায়েদের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শনের এক অনন্য সুযোগ হিসেবে বিবেচিত। তবে বাণিজ্যিকীকরণের কারণে দিনটির মূল আবেদন কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আনা মেরি জার্ভিস এর বিরোধিতা করেছিলেন। তার প্রচেষ্টার ফলে আজও আমরা মা দিবসকে হৃদয়ের গভীর থেকে উদযাপন করি, যেখানে মায়ের প্রতি ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধ প্রকাশের গুরুত্ব অপরিসীম।