ডাল-ভাত খাওয়াতেও ব্যর্থ হয়েছিলেন খালেদা জিয়া: শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী

খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়েছিলেন যে আমাদের দেশে মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াবে। সেই ডাল-ভাত খাওয়াতেও তো ব্যর্থ হয়েছিল তারা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী ‍শেখ হাসিনা।

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্‌বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফখরুদ্দিন সাহেব প্রধান উপদেষ্টা, ইয়াজউদ্দিন সাহেব রাষ্ট্রপতি, সেনাপ্রধান মইন উদ্দিন, তারা ঘোষণা দিলেন আলু খাওয়ার জন্য, আলু দিয়ে নানা রকমের খাদ্য তৈরি করা হলো, তা প্রদর্শন করা হলো বেশ উন্নত হোটেলে। মানুষ ভাত পাচ্ছে না কী হয়েছে? আলু খাবে। কেউ আমাদের ডাল ভাত খাওয়াতে চাইলো, কেউ আমাদের আলু খাওয়াতে চাইলো। মাছে ভাতে বাঙালি আমরা, মাছ ও ভাত পেলেই আমাদের যথেষ্ট। সেটাই তো আমরা চাই। এখন অন্তত বলতে পারি মাছ-ভাতের অভাব নাই। ডাল-ভাতেরও অভাব নাই।

তিনি বলেন, মানুষের চাহিদা এখন মাংস, আরও বড় বড় মাছ খাবে। এখন দেখি জিনিসের দাম নিয়ে চিন্তিত, পেঁয়াজের দাম বাড়লো কেন? আমাদের ৯০ ভাগ পেঁয়াজ ভারত থেকে আনতে হতো। ভোজ্য তেল ৯০ ভাগ আনতে হয় বিদেশ থেকে। পেঁয়াজ নিয়ে আমাদের এত ঝামেলা, তাহলে আমরা কেন পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারবো না? এখন প্রায় ৪০ ভাগ আমরা নিজেরাই উৎপাদন করতে পারি। আমরা কারো উপর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবো না। আমরা নিজেরা উৎপাদন করব।

জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো। কিন্তু অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা বারবার ক্ষমতায় এসেছে, তারা এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, এটাই দুর্ভাগ্য। ১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকার গঠন করলাম, তখন রিজার্ভ মানিও তেমন ছিল না। এশিয়াতে তখন খাদ্য মন্দা। আমাদের লক্ষ্য ছিল, আমরা কারো কাছে হাত পেতে চলব না। নিজের ফসল নিজে উৎপাদন করব।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সবসময় বলতেন— আমরা কারো কাছে ভিক্ষা চাইব না, কারণ ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। আমরা মান-সম্মান নিয়েই বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে চাই। সেই আদর্শে আমরা দেশকে এগিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, পার্লামেন্টে যেদিন ঘোষণা দিলাম বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তখন বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়া বসা ছিলেন। আর সাইফুর রহমান উঠে দাঁড়িয়ে বলল, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে খাদ্যের সাহায্য পাওয়া যাবে না। তাদের চিন্তাধারা ছিল আমরা প্রতিনিয়ত অন্যজনের কাছে হাত পেতে থাকবো। অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকব, আর ভিক্ষা চেয়ে খাবার খাব।

২০০১ সালে আমার সরকারের মেয়াদ শেষ হলে যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করি, তখন ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত আমরা রেখে গিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যের বিষয় ২০০৯ সালে যখন আমরা আবার ক্ষমতায় আসি তখন দেখি, ২৬ লাখ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত তো দূরের কথা বরং ৩০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল বাংলাদেশে।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা যে পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, ২০০১ সালে বিএনপি এসে সেগুলোর ওপর হামলা চালায়। অনেকের পোল্ট্রি ফার্মে বোমা মেরে মুরগি উড়িয়ে দিয়েছে। খামারিদের কাছ থেকে গরু নিয়ে খেয়ে ফেলেছে। পেঁপে থেকে শুরু করে সকল ফলের গাছ কেটে ফেলেছে। আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে তারা এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। দেশের জন্য এটা কত ক্ষতি হবে সেই চিন্তা তাদের মাথায় ছিল না।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে আমরা গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। গবেষণা ইনস্টিটিউটগুলো জাতির পিতা করে দিয়ে গেছেন। গবেষণা ছাড়া উন্নত জাত বা অধিক ফলন ফলানো সম্ভব না।

Share on whatsapp
WhatsApp
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram