অবিবাহিত সেজে অর্ধশতাধিক নারীকে ব্ল্যাকমেইল, ধরা র‌্যাবের হাতে

পাঁচ মাস দেশে এসেছেন সৌদি প্রবাসী জহির উদ্দিন (৩২)। দেশে এসেই শুরু করে এক অভিনব ব্ল্যাকমেইল ব্যবসা।দুই সন্তানের জনক হয়েও নিজে অবিবাহিত সেজে বিভিন্ন বয়সের নারী সাথে গড়ে তুলে প্রেমের সম্পর্ক। বিশ্বাস জমাতে প্রথমে টাকা পয়সার সহযোগিতার হাতও বাড়িয়ে দেয়।

এভাবে কিছুদিন সম্পর্কের পর বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজেছেন বলে দেখা সাক্ষাতের আড়ালে মোবাইল থেকে হাতিয়ে নেয় বিভিন্ন একান্ত ছবি ও ভিডিও। পরে দিয়ে বসে বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক প্রস্তাব। রাজি না হলেই দাবি করা হয় মোটা অংকের টাকা। টাকা না দিলেই করা হয় ব্ল্যাকমেইল।

কক্সবাজারে এক এনজিও কর্মকর্তার নারীর অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে এমন দুইজনকে গ্রেফতার করে র্যাব-৭।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টায় র‌্যাব-০৭ এর চান্দগাঁও মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৭ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মো. রেজওয়ানুর রহমান। এসময় র‌্যাব-০৭এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেফতার জহির কক্সবাজার জেলার পেকুয়া রাজাখালীর আমিনুল হকের ছেলে। তার সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। তার সহযোগী সরোয়ার পেকুয়া মিয়ারপাড়ার শওকতের ছেলে। পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তাদেরকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানায় র‌্যাব।

মেজর মো. রেজওয়ানুর রহমান বলেন, ভিকটিম তরুণী একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করে উচ্চ বেতনে একটি এনজিওতে কক্সবাজারে চাকরি করছেন। তার পরিবারও তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য পাত্র খুঁজছেন। অপর দিকে ‘সাইবার অপরাধী’ জহির নিজেকে সেনাবাহিনীর ননকমিশন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিয়ের আলাপ করে। এতে আগ্রহী হয়ে সেই তরুণী জহিরের সাথে দেখা করেন। এসময় মা-বাবাকে দেখানোর কথা বলে মোবাইলে থাকা ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও। পরে ঐ নারী এনজিও কর্মীকে দেওয়া হয় অনৈতিক প্রস্তাব। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পরে তিনি নিস্তার পেতে র‌্যাবের স্মরণাপন্ন হন। আমরা তদন্তে সত্যতা পেয়ে জহিরকে গ্রেপ্তার করি। সাথে তার সহযোগী সরোয়ারকেও।

তিনি আরও বলেন, জহিরকে গ্রেপ্তার করে দেখি তার অপরাধের তালিকা আরও লম্বা। জহির তার সব ধরণের নিকটাত্মীয়কে এভাবে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়েছে। যুবতীদের পাশাপাশি তার দাদীর বয়সী নারীও তার শিকারে পরিণত হয়েছেন।

র‌্যাব-০৭এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার জানান, জহিরের মুঠোফোন তল্লাশী করে অসংখ্য তরুণীর ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি, ভিডিও পাওয়া গেছে, যাদের কাছ থেকে সে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অনেকের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিংবা তাদের নিকটাত্মীয়দের কাছেও ছড়িয়ে দিয়েছে।

Share on whatsapp
WhatsApp
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram