জোয়ারায় গরু চুরিতে দিশেহারা খামারীরা, নির্বিকার জনপ্রতিনিধিরা

সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের চন্দনাইশের জোয়ারা ইউনিয়নে গৃহপালিত গবাদি পশু প্রতি রাতে সংঘবদ্ধ চোর চক্র চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে খামারীরা। ভুক্তভোগীদের দাবি,গত কয়েক বছরে প্রায় অর্ধশতাধিক গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয়ভাবে গরু চুরির পর চৌকিদার বসানো হলেও ১৫-২০ দিন পর তারা আর ডিউটি করে না ফলে আবারো চুরির ঘটনা ঘটে ও এসব ঘটনায় নির্বিকার চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা।

পুলিশ জানায়,গত ১মাস ধরে চুরি অনেকটা কমে এসেছে। তবে স্থানীয় ও জনপ্রতিনিধিরা আরো কার্যকরী পদক্ষেপ নিলে তা কমে আসতো।

জোয়ারা ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত কনজ বড়ুয়া, কার্তিক দে,আশিষ বড়ুয়া, কানুদে, পিবলু বড়ুয়া, দিলিপ বড়ুয়া, অজিদ দে,পান্না দে প্রমুখের সাথে প্রতিবেদক কথা বলেন।

ফতেহ নগর গ্রামের বাসিন্দা কার্তিক দে জানান,গত কয়েকবছর এ আমাদের এলাকার অনেকগুলো গরু চুরি হয়েছে।আমারও ২টি গরু চুরি হয়েছে।তার দাম প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। গত কয়েকমাস আগেও ৪ টি গরু চুরি হয়েছে।

কিভাবে গরু চুরি হয়েছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার অবনতি ছিল কিনা প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,”রাতে ঘুম গেছি, সকালে উঠে দেখি গরুর ঘরের দরজা কাটি নিয়ে গেছে। গ্রামের মেম্বার কে বললাম, তারপর চেয়ারম্যানকে জানালাম তখন,এখন তারা বলতেছে গরু পাহারা দেবেন না হয় টাকা পয়সা গরু বিক্রি করে ব্যাংকে টাকা জমা রাখেন”।

গরু চুরি রুখতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির ভুমিকা কেমন জানতে চাইলে ভুক্তভোগী কার্তিক দে আরো জানান,চেয়ারম্যান মাঝে মধ্যে চৌকিদার দিলেও তারা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে না।গরু চুরি হলে দু চার দিন, পনের দিন পর্যন্ত ডিউটি দেয়।বলতে গেলে চেয়ারম্যান নির্বিকার ছিল।এমনকি স্বয়ং চৌকিদারের গরুও চুরি হয়েছে যোগ করেন তিনি।

এদিকে, কানু দে নামে আরেক ভুক্তভোগী জানান,একে একে আমার ৫ টা গরু নিছে দুবারে।চেয়ারম্যান কিছুই করে না। চেয়ারম্যানকে বলেও লাভ নেই।উনি এসে শুধু দেখে গেছেন।

এব্যাপারে চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ চৌধুরী রোকন বলেন, “তিনি তার দায়িত্ব পালন করছেন। গরু চুরি বিষয়ে সাংবাদিকদের বললে কি করতে পারে? বলে তিনি এই প্রতিবেদক কে উল্টো প্রশ্ন করেন। গরীব মানুষের গবাদি পশু চুরি হলে তারা নি:শ্ব হয়ে পড়ে, এই ব্যাপারে চেয়ারম্যান জনপ্রতিনিধি হিসেবে কোন দায়িত্ব কি নেই? এই বিষয়ে চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের কে জানালো, কেন জানালো বলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।

তবে এখন পর্যন্ত গরু সহ কোন চোরকে আটক করতে না পারলে এ বিষয়ে চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)আনোয়ার বলেন,গত এক মাস ধরে গরু চুরি ঘটনা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। মাঝখানে কিছুদিন গরু চুরি হয়েছে। এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করেছি। বিষয়টি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

জানা যায়,ঐ এলাকার মানুষ গরুর দুধ বিক্রি করে পরিবারের খরচের টাকা যোগায়। কৃষি নির্ভর পরিবারগুলো গরু দিয়ে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে। আর গরু চোরেরা যখন এসব মূল্যবান গরু চুরি করে নিয়ে যায় তখন হতদরিদ্র এসব পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে পড়ে।

Share on whatsapp
WhatsApp
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram