রোববার ভয়াবহ ভূমিকম্পের পরও বন্ধ হয়নি তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে যুদ্ধ। ৭.৮ মাত্রার এ ভূমিকম্পে ৫ হাজারের অধিক মানুষ নিহত হয়।ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় হাজার হাজার আবাসিক ভবন।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সীমান্তে সশস্ত্র ওয়াইপিজি ও পিকেকে বাহিনী রকেট হামলা অব্যাহত রেখেছে। জবাবে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে তাদের সেনারা। তবে এসব হামলা-পাল্টা হামলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানে ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। তুরস্কের স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি হয়। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে।
ভূমিকম্পে তুরস্কের পাশাপাশি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিরিয়াও। হাজার হাজার ভবন মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। যার নিচে চাপা পড়েছে অসংখ্য মানুষ। তাদের উদ্ধারে সোমবার সকাল থেকেই নিরবচ্ছিন্ন অভিযান চলছে। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সেই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত ৫ হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তুরস্কে ৩ হাজার ৫৪৯ ও সিরিয়ায় ১ হাজার ৬০২ জন। তীব্র ঠান্ডা, তুষারপাত ও বৃষ্টির মধ্যে উদ্ধারকাজ বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা অসংখ্য মানুষ। বাঁচার জন্য আর্তচিৎকার করছেন তারা।
তুরস্কে ২৪ হাজারের বেশি দুর্যোগ ও জরুরি কর্মকর্তা উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বেঁচে যাওয়া মানুষেরাও। তবে প্রচণ্ড বৈরী আবহাওয়ার ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। সময়মতো বেঁচে থাকা মানুষের কাছে তারা পৌঁছাতে পারছেন না। এ কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
ইস্তাবুল থেকে আল-জাজিরা জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। ভূমিকম্পের ফলে রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গাজিয়ানটেপ, হাতায়, আদানা ও কাহরামানমারাস বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সেগুলো আক্ষরিক অর্থে ভেঙে গেছে, ফাটল ধরেছে। প্রধান সড়কগুলোরও একই অবস্থা। বিশেষ করে হাতায় ও গাজিয়ানটেপের মধ্যকার সড়কগুলো।
খবরে আরও বলা হয়েছে, এ কারণেই উদ্ধারকর্মীদের পক্ষে সেখানে পৌঁছানো ও এসব এলাকায় মানবিক ও চিকিৎসাসেবা দেয়া কঠিন হয়ে উঠছে। মালতয়া ও আদিয়ামান শহরে ‘ভারী তুষারপাত’ হয়েছে, যা এক সপ্তাহ অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।