ছন্দময় খেলে পর্তুগালকে হারাতে চায় মরক্কো

এবারের বিশ্বকাপে সকলের মন জয় করে নিয়েছে মরক্কো। দারুণ ছন্দময় ফুটবল খেলা দিয়ে সকলের নজর কেড়েছেন তারা।

মাঠের ফুটবলের পাশাপাশি মাঠের বাইরে তাদের সাদাসিধে চলনে সকলের মনে স্থান করে নিয়েছেন আশরাফ হাকিমিরা। এবারের বিশ্বকাপে একের পর এক সাফল্য নিয়ে ইতোমধ্যেই কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেছে তারা।

এটা যেন এক রূপকথার গল্প। এমন রূপকথার গল্প অনেকবারই দেখেছে বিশ্বকাপ ফুটবল।

এবার এই রূপ কথার গল্প কতটা লম্বা করতে পারে মরক্কান ফুটবলাররা তা-ই দেখার বিষয়।
অন্যদিকে দারুণ ছন্দে ফিরেছে পর্তুগাল ফুটবল দল। ছন্দে ফেরা পর্তুগালের চোখে স্বপ্নটা আকাশছোঁয়া। দলের সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বিদায়ী বিশ্বকাপে তার জন্য একটি বিশ্বকাপ জয় করতে চায় তারা। আল থুমামা স্টেডিয়ামে আজ (শনিবার) রাত নয়টায় সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামছে দুই দল।

আফ্রিকার একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে এবারের বিশ্বকাপে শেষ আটে উঠেছে মরক্কো। সেটাও ইতিহাস গড়ে। এর আগে কখনই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারেনি তারা। এবার এসেছে, সেটাও স্পেনের মতো পরাশক্তিকে হারিয়ে। ১২০ মিনিটের লড়াইয়ে স্পেনকে আটকে রাখার পর টাইব্রেকারে ৩-০ ব্যবধানে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রেখেছে আফ্রিকার সিংহরা।

অন্যদিকে পর্তুগাল এবার গ্রুপ পর্বে ধুঁকলেও শেষ ষোলোতে ভয়ংকর চেহারায় হাজির হয়। সুইজারল্যান্ডকে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত করে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখে ফার্নান্দো সান্তোসের দল। দাপুটে জয়ে আকাশে উড়তে থাকা পর্তুগালের জন্য একমাত্র চিন্তা হতে পারে রোনালদো। দল জিতলেও পর্তুগিজ যুবরাজকে নিয়ে বেশ কানাঘুষা চলছে।

কোচের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরেই তাকে শেষ ষোলোর ম্যাচে শুরুর একাদশে নামানো হয়নি, এমন গুঞ্জন বাতাসে। পর্তুগালের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা এবং সর্বোচ্চ এই গোলদাতাকে আজ মরক্কোর বিপক্ষেও সাইডবেঞ্চে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। পর্তুগালের কোচ হিসেবে ফার্নান্দো সান্তোসের এটি দ্বিতীয় বিশ্বকাপ। দলের সেরা তারকা রোনালদো পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলছেন। বিশ্বকাপ জেতার মতো স্কোয়াড ছিল তাদের বরাবরই। তবে এই বিশ্বকাপে দলটির রূপান্তর হয়ে গেছে যেন আচমকাই।

তবে রূপকথায় কোনও অঙ্ক মেলে না। গত ইউরোর সেমিফাইনালিস্ট স্পেন যেমন শেষ আটের পথ খুঁজে পায়নি। পর্তুগাল-মরক্কোর রেকর্ডেও মরক্কানদের জন্য অনুপ্রেরণা আছে। এর আগে বিশ্বকাপেই দুইবার মুখোমুখি হয়েছে তারা। দেখা হয়েছে ২০১৮-এর গ্রুপ পর্বেই। যে ম্যাচে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর চতুর্থ মিনিটে করা একমাত্র গোলটি ধরে রেখেই মাঠ ছাড়ে পর্তুগাল। তার আগের দেখা সেই ১৯৮৬-তে। মরক্কোর প্রথম নক আউট রাউন্ডে ওঠাও সেবার। পর্তুগালকে হারিয়ে গ্রুপসেরা হয়েই উঠেছিল তারা শেষ ষোলোতে। এবার আরও এক ধাপ এগোনোর মিশনে সেই পর্তুগিজদেরই পেছনে ফেলার চ্যালেঞ্জ তাদের।

কোচ ওয়ালিদ রেগরাগি ভীষণ অনুপ্রাণিত, ‘আমরা আকাশ ছুঁতে চাই। স্বপ্ন দেখতে বাধা কি! এখানেই থামতে চাই না আমরা। সব প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, আমরা কঠিন প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছি। বিশ্বকাপ জয়ও অসম্ভব নয়। ’ বিশ্বকাপের ঠিক আগে আগেই দলটির দায়িত্ব নিয়েছেন এই কোচ। তাঁর অধীনে সাত ম্যাচ হারেনি মরক্কানরা। এই সময়ে গোল হজম করেছে মাত্র একটি। তবে শেষ ষোলোতে ছয় গোল করে আসা গনসালো রামোসদের সামনে তাদের আজ বড় পরীক্ষা।

Share on whatsapp
WhatsApp
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram