সারাদেশের ডিজেলচালিত সব বিদ্যুৎকেন্দ্র আগামী জুনের মধ্যে বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ ছাড়া তেল-গ্যাস আমদানিতে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার কথাও জানান প্রতিমন্ত্রী।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। বৈশ্বিক ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ।
সেমিনারে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সহনীয় দামে গ্রাহকের দোরগোড়ায় জ্বালানি পৌঁছে দেয়াই বড় চ্যালেঞ্জ। আর ব্যয়বহুল হওয়ায় আগামী জুনের মধ্যে সব ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হচ্ছে।
তেল-গ্যাস আমদানিতে বেসরকারি খাতকেও সম্পৃক্ত করা হচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ খাত স্মার্ট গ্রিডে যাচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বছর পাঁচেকের মধ্যে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন হচ্ছে।
সম্প্রতি বৈশ্বিক জ্বালানি পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত রূপ বদলাচ্ছে। আগামী দিনে এ খাতে নানা চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। এমন পরিস্থিতে সেমিনারে নিজস্ব সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গুরুত্ব দেয়া হয়। বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস, বর্তমান পরিস্থিতির খুব একটা বদল না হলে ২০৩০ সাল নাগাদ জ্বালানি আমদানিতে বছরে ২০ থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে। নিজস্ব জ্বালানি অনুসন্ধানে জোরালো পদক্ষেপের পাশাপাশি আমদানির উৎস বহুমুখীকরণের জন্য কৌশলী হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম তামিম বলেন, যে কোনো পরিস্থিতির মাঝে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে সমঝোতা করা যাবে না। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে আমাদের জ্বালানি সরবরাহ চালিয়ে যেতে হবে। তবে আমাদের সর্বোচ্চ নিজস্ব জ্বালানি সরবরাহ করার চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু এরপরও জ্বালানি আমদানির বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারব না। এজন্য আমাদের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি রাখতে হবে।
ভূতত্ত্ববিদ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বদরূল ইমাম বলেন, বাংলাদেশে এখনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে গ্যাস রয়েছে। এজন্য আমাদের এক্সপ্লোর চালিয়ে যেতে হবে।
মূল ভাবনার বিষয় জ্বালানির অস্থিতিশীল ভবিষ্যৎ জানিয়ে নীতিনির্ধাকরা বলেন, আর বছর তিনেকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে নিজস্ব গ্যাসের উৎপাদন বাড়বে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, শুধু স্বল্পমেয়াদি কার্যক্রম নিয়ে পড়ে না থেকে দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম নিয়েও ভাবা হচ্ছে।