স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে প্রধান শিক্ষকের যাবজ্জীবন

রাঙামাটি জেলার লংগদুতে স্কুলছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণের অপরাধে আব্দুর রহিম নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন বছরে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ.ই.এম ইসমাইল হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিত আব্দুর রহিম লংগদুর করল্যাছড়ি আর.এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৫সেপ্টেম্বর সকালে ওই স্কুলছাত্রী তাদের হারিয়ে যাওয়া ছাগল খুঁজতে বের হন। একপর্যায়ে তাকে লংগদু উপজেলার করল্যাছড়ি আর.এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের ভেতরে লেবু দেখিয়ে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পরে কাউকে কিছু না জানাতে ছাত্রীকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান। স্কুলছাত্রীও ভয় পেয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে দুইদিন ঘরে কান্নাকাটি করে। পরে তার মাকে বিষয়টি জানায়। পরে তার মা সমাজের গণমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি জানান। তারা কিছু করতে না পারায় পরে লংগদু থানায় ৫ অক্টোবর থানায় মামলা দায়ের করেন।

এদিকে আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, আসামি যেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ভিকটিম সেই বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। আসামি স্বীকৃত মতে বিবাহিত। তিনি একদিকে যেমন তার পরিবারের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন, অন্যদিকে তার নিজের ছাত্রীকে ধর্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকতার মহান পেশাকে কলঙ্কিত করেছেন। অধিকিন্তু, তিনি ধর্ষণের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য একে পাহাড়ি বাঙালি জাতিগত বিরোধের ফলাফল মর্মে দাবিকরেছেন। তিনি পরবর্তীতে মামলা থেকে বাঁচার জন্য ভিকটিমকে ধর্মান্তরিত করে বিবাহ করেছেন মর্মে আদালতে কাগজ দাখিল করেছেন। তৎপরবর্তীতে আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ কালে আবার দাবি করেছেন যে— তিনি এজাহারকারীর ফাঁদে পড়ে ভিকটিমকে বাঁচানোর জন্য তাকে বিবাহ করেছেন। আসামির উক্তরুপ কর্ম প্রতীয়মান হচ্ছে, আসামি প্রকৃতপক্ষে একজন প্রতারক এবং বিকৃত যৌনাচারের ধারক ও বাহক। তাকে অনুকম্পা প্রদর্শনের সুযোগ নেই। অধিকিন্তু, আসামিকে যথোপযুক্ত সাজা প্রদান করা হলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় বসবাসরত পাহাড়ি, বাঙালিসহ সকল ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর জনগণের নিকট পুনরায় এই বার্তা যাবে, যে আইনের দৃষ্টিতে সকলে সমান এবং বিচার বিভাগ সকলের জন্যই উন্মুক্ত।

আসামি পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মোখতার আহমেদ বলেন, এই রায়ে আমরা সংক্ষুদ্ধ। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম অভি জানান, ধর্ষণ মামলার এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট

Share on whatsapp
WhatsApp
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram