কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার প্রথম প্রতিপক্ষ সৌদি আরব

কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ সৌদি আরব। এর আগে পাঁচবার বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে চারবারই গ্রুপপর্বের বাধা পার হতে ব্যর্থ হওয়া গ্রিন ফ্যালকনরা আরবের মাটিতে স্বপ্ন দেখছে সবুজ পতাকার জয়রথ ছোটাতে। কঠিন সব প্রতিপক্ষ সামনে থাকলেও নিজেদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসী তারা।

১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত বিশ্বকাপে প্রথমবার অংশ নিয়েও দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছিল সৌদি আরব। এরপর আরও চারবার বিশ্বকাপের মঞ্চে দেখা যায় তাদের। কাতারে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে আসা দলটি পড়েছে কঠিন গ্রুপে।

আর্জেন্টিনার মতো বিশ্বকাপের ফেবারিট দল ছাড়াও গ্রুপে আছে মেক্সিকো ও পোল্যান্ড। সৌদি ঘরোয়া লিগের খেলোয়াড় নিয়ে গড়া দলটিতে নেই বড় কোনো নাম। এমন অবস্থায় গ্রিন ফ্যালকনখ্যাত দলটি গ্রুপপর্বের বাধা পার হবে এমন দুরাশা হয়তো স্বয়ং সৌদি সমর্থকরাও করছেন না।

একনজরে সৌদি আরব:
ডাকনাম: দ্য গ্রিন ফ্যালকন
অংশগ্রহণ: ৬ বার (১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০০২, ২০০৬, ২০১৮ ও ২০২২)
সেরা সাফল্য: রাউন্ড অব সিক্সটিন (১৯৯৪)
র‍্যাঙ্কিং: ৫১
কোচ: হার্ভে রেনার্ড
অধিনায়ক: সালমান আল ফারাজ
বিশ্বকাপের গ্রুপ: সি (প্রতিপক্ষ: আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো ও পোল্যান্ড।

সৌদি আরবের মূল শক্তির জায়গা তাদের ডিফেন্স। দারুণ এক প্রতিরক্ষাব্যূহ তৈরি করেছেন হার্ভে রেনার্ড। বাছাই পর্বের ১২ ম্যাচে কোনো গোলই হজম করেনি তার দল। তবে বিশ্বকাপে কঠিনসব প্রতিপক্ষের সামনে এই চক্রব্যূহ কতটা কার্যকরী হয় তা দেখার বিষয়। রক্ষণ শক্তির জায়গা হলে আক্রমণভাগ সৌদি আরবের দুর্বলতার জায়গা। কাউন্টার অ্যাটাকে সুযোগ খুঁজে গোল দিতেই বেশি অভ্যস্ত দলটা।

কোচের পরিকল্পনা ও কৌশল: দুটি দেশের হয়ে আফ্রিকান কাপ অব নেশন্সজয়ী একমাত্র কোচ হার্ভে রেনার্ড ২০১৯ সালে সৌদি আরব জাতীয় দলের দায়িত্ব নেন। অত্যন্ত অভিজ্ঞ ও কৌশলী এই ফরাসি দারুণ সফল হয়েছেন দেশটির কোচের দায়িত্ব নিয়ে। দেশটির কোচের দায়িত্ব পালনকারী বিদেশি কোচদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৯ ম্যাচে জয় এনে দিয়েছেন রেনার্ড।

কোচ হিসেবে রেনার্ড বেশির ভাগ সময় আস্থা রাখেন ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে। তবে প্রতিপক্ষ বুঝে কৌশলে পরিবর্তনও আনেন নিয়মিত। কিছুটা রক্ষণাত্মক ঘরানার এই কোচ।

মূল খেলোয়াড়:

সালেম আল-দাওসারি: সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালের উইঙ্গার সালেম আল-দাওসারি দলের মূল তারকা। ৩১ বছর বয়সী এই তারকা বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ৭ গোল করে দলকে বিশ্বকাপে তুলতে বড় ভূমিকা রেখেছেন। দেশের হয়ে ২০১১ সালে অভিষেকের পর থেকে ৬৭ ম্যাচ খেলে ১৭ গোল করেছেন তিনি। ২০১৮ বিশ্বকাপে সৌদি আরবের একমাত্র জয়ের ম্যাচে জয়সূচক গোলটিও ছিল তারই করা। মিশরের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জয়ের দিনে খেলার একদম শেষের দিকে গোলটি করেন তিনি।

সালমান আল ফারাজ: ৩৩ বছর বয়সী আল ফারাজ খেলেন দেশটির ক্লাব আল হিলালে। ক্লাব ও জাতীয় দল দুই জায়গায়ই পালন করেন অধিনায়কের দায়িত্ব। দারুণ এক মিডফিল্ডার আল ফারাজ। জাতীয় দলের জার্সিতে তার অভিষেক ২০১৮ সালে। এখন পর্যন্ত ৭০ ম্যাচ খেলে ৮ গোল করেছেন এই মিডফিল্ডার। বিশ্বকাপে গ্রিন ফ্যালকনদের মধ্যমাঠের গুরুদায়িত্ব থাকছে তার কাঁধেই।

ইতিহাস: সৌদি আরব বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে। প্রথমবার খেলতে এসেই দলটা প্রথম পর্বের বাধা অতিক্রম করে পা রাখে নকআউট স্টেজে। এরপর আরও চার আসরে খেলে একবারও গ্রুপপর্বের বাধা পেরোতে পারেনি গ্রিন ফ্যালকনরা। ২০০২ বিশ্বকাপে জার্মানির বিপক্ষে ৮-০ গোলে হারের লজ্জায়ও পুড়তে হয়েছে তাদের। কাতারে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেলতে আসা দলটিতে বড় কোনো তারকা না থাকলেও আর্জেন্টিনা-পোল্যান্ড-মেক্সিকোর মতো দলকে টপকে দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে চায় তারা।

বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ১৬ ম্যাচ খেলে ৩টিতে জয় পেয়েছে সৌদি আরব। এ ছাড়া ড্র করেছে ২ ম্যাচে। বাকি ১১ ম্যাচে হেরেছে গ্রিন ফ্যালকনরা।

Share on whatsapp
WhatsApp
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram