জ্বালানী তেল, পরিবহন ভাড়া সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, অসহনীয় লোডশেডিং এবং ভোলায় পুলিশের গুলিতে বর্বরোচিত হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ২৬ আগস্ট (শুক্রবার) বিকেলে বাশঁখালী উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিলে ডাক দেয়। ওই সমাবেশ পুকুরিয়া ইউনিয়নে করার কথা ছিল। কিন্তু বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ বিএনপির সমাবেশের খবর জেনে শুক্রবার সকাল থেকে পুরো বাঁশখালীর প্রধান সড়কে ইউনিয়ন ভিত্তিক নেতাকর্মীরা যার যার অবস্থানে সভা সমাবেশের ডাক দিয়ে রাস্তা দখল করে রাখে। পরে পুলিশ ও আওয়ামীলীগ এর বাধায় বিএনপির সমাবেশ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর পশ্চিম গুনাগরীর বাড়ির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল ৪টায় ওই সমাবেশ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাড়ি হয়ে প্রধান সড়কে উঠার এক পর্যায়ে পুলিশ বাধা প্রদান করে। ওই সময় পুলিশের অতর্কিত লাঠিচার্জ ও গুলিতে এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের অসংখ্য নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়। পুলিশের গুলিতে ও হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শহীদুল ইসলাম, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব পলাশ,ছাত্রদল নেতা এনাম, লুটু মেম্বার, তাহের সহ অসংখ্য নেতাকর্মী।
বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জ্বালানী তেল, পরিবহন ভাড়া সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনজীবন আজ চরমভাবে বিপর্যস্থ। সাধারণ মানুষের বাঁচার কোন পথ নেই। সরকারের জুলুম, নির্যাতনে চারিদিকে মানুষের মধ্যে হাহাকার ও আর্তনাদ চলছে। আওয়ামী স্বেচ্ছাচারী দু:শাসনের বিরুদ্ধে চারিদিকে যখন জনগণ ফুসেঁ উঠছে তখন তারা গদি হারানোর ভয়ে উন্মাদ হয়ে গেছে। তাই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনরত বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর পুলিশ বাহিনীকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের জনগণের অধিকার আদায়ে চলমান আন্দোলন থেকে এক বিন্দুও পিছ পা হবোনা। সকল বাধা অতিক্রম করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় আমরা দৃঢ় অবিচল। বাধা আসবে, সকল বাধা আমরা জনগণকে নিয়ে মোকাবেলা করব। তাই সবাইকে সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এবার এমন আন্দোলন হবে, সরকার পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। এই আন্দোলনে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব আবু সুফিয়ান বলেন, সরকারের অনিয়ম, দুর্নীতি, দু:শাসন ও লুটপাটের বিরুদ্ধে সারাদেশে যখন সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। কারণ সরকারের পায়ের নিচে মাটি নাই,তাই বিএনপির শান্তিপূর্ন কর্মসূচিতে পুলিশ দিয়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে এই অবৈধ সরকার পুলিশ দিয়ে দেশ শাসন করছে। চলমান আন্দোলনকে বাধাগ্রস্থ করতে পুলিশ দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে দিচ্ছে। নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা হামলা করছে। পুলিশ দিয়ে বিএনপির আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। কারণ এই আন্দোলন দেশ বাঁচানোর, এই আন্দোলন দেশের মানুষকে মুক্ত করার। ইতিপূর্বে পুলিশের গুলিতে ভোলায় দুইজন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছে তাদের আত্মত্যাগকে ধারণ করেই এ দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এটি আরও বেগবান হয়ে এ সরকারকে পতন আন্দোলন তরান্বিত করবে। ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ে সারাদেশে জনগণের যে বাধ ভাঙ্গা জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, পুুলিশ ও দলীয় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে তা রুখা যাবেনা।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাস্টার লোকমানের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তাক আহমদ খান, নুরুল আনোয়ার চৌধুরী , শাখাওয়াত জামাল দুলাল, মো. জামাল হোসেন, লায়ন হেলাল উদ্দিন, আমিনুর রহমান চৌধুরী, রেজাউল হক চৌধুরী, আবদুস সবুর চৌধুরী, অধ্যাপক শহীদুল আলম বুলবুল, এডভোকেট কাশেম চৌধুরী, এডভোকেট নাছির উদ্দীন, মহসীন চেয়ারম্যান, এডভোকেট শওকত উসমান, মৌলানা ফোরকান,মইনুল হক পলাশ,জান্নাতুন্নাইম রিকু প্রমুখ।