চুয়াডাঙ্গা জেলায় অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বিরাজ করছে। শনিবার (১০ মে) বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ। এই অতিমাত্রার গরমে গলে যাচ্ছে শহরের বিভিন্ন সড়কের পিচ, জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত।
গত তিন দিন ধরেই চুয়াডাঙ্গা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার স্থান ধরে রেখেছে। শুক্রবার (৯ মে) ছিল ৪১.২ ডিগ্রি, আর বৃহস্পতিবার (৮ মে) ছিল ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রতিদিনই এই অঞ্চলের গরম তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ১৫ মে পর্যন্ত এই তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। বৃষ্টি না হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা কম। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, আগামী সোমবার থেকে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। তবে ততদিন পর্যন্ত বাইরে চলাচলে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এই গরমে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষজন। রিকশাচালক, দিনমজুর ও কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। শহরের কোর্টরোড-বড়বাজার সড়কে পিচ গলে যাওয়ায় যান চলাচলেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে সড়ক বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম বলেন, সড়কে বালু ছিটিয়ে চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
গরমে শরবত ও ডাবের চাহিদা বেড়েছে হঠাৎ করেই। শহরের এক শরবত বিক্রেতা জানান, সকাল ও বিকেলে বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। ডাব বিক্রেতা আকাশ জানান, একটি ডাব এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৭০ টাকায়।
তীব্র গরমে কৃষিকাজেও দেখা দিয়েছে ব্যাঘাত। সদরের বেলগাছি গ্রামের কৃষক সজিব উদ্দিন বলেন, “ভুট্টা কাটার মৌসুম চলছে, কিন্তু শ্রমিকরা প্রচণ্ড রোদের কারণে ফজরের পরই কাজ শুরু করে সকালেই শেষ করে চলে যাচ্ছেন।”
দিননাথপুর গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, “পানের বরজে ক্ষতি হচ্ছে। পানি দিলেও পাতাগুলো ছোট হয়ে যাচ্ছে, বাড়ছে না।”
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, তীব্র তাপপ্রবাহে বিশেষ করে বয়স্কদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। তাই অপ্রয়োজনীয়ভাবে বাইরে না যেতে এবং প্রচুর পানি ও শরবত পান করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।